ঋণ নিতে চাচ্ছেন কিন্তু জামানত নেই? বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক এবং এসব ব্যাংক থেকে কীভাবে ঋণ নিতে হয় এসব তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই পোস্টে।
অনেকেই নতুন উদ্যোগ নিতে চান এজন্য ঋণ নিতে ইচ্ছুক থাকেন। আবার, অনেকেই ঋণ নিতে চান কিন্তু ঋণের বিপরীতে জামানত রাখার মতো কিছু নেই। এছাড়াও, আরও অনেকেই বিভিন্ন কারণে জামানত ছাড়া ঋণ খুঁজে থাকেন। জামানত ছাড়া ঋণ যারা খুঁজছেন তারা পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
আমাদের দেশের বেশ কিছু ব্যাংক থেকে জামানত ছাড়া ঋণ প্রদান করে থাকে। তো চলুন, কোন কোন ব্যাংক জামানত ছাড়া ঋণ দেয় এসব তথ্য জেনে নেয়া যাক।
Table of Contents
বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক
গ্রামীণ ব্যাংক, আশা ব্যাংক, উদ্দীপন সহ বেশ কিছু এনজিও থেকে বিনা জামানতে ঋণ নেয়া যায়। এছাড়া, বাংলাদশ কৃষি ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক সহ বেশ কিছু বেসরকারি ব্যাংক থেকেও জামানত ছাড়া ঋণ প্রদান করা হয়। যেসব ব্যাংক থেকে জামানত ছাড়া ঋণ প্রদান করা হয়, এসব ব্যাংকগুলোর নাম একটি তালিকা আকারে নিচে শেয়ার করা হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রায় সকল ব্যাংক থেকেই জামানতবিহীন ঋণ দেয়া হয়ে থাকে। তবে, জামানতবিহীন ঋণ গ্রহণ করার জন্য কিছু শর্ত দেয়া হয়। যেমন – ঋণের টাকার পরিমাণ কম হবে, মেয়াদকাল কম হবে, সুদের হার কিছু টা বেশি হয়। এছাড়াও, আরও কিছু শর্ত দেয়া থাকে।
তবে, বিভিন্ন মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান যেমন গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, উদ্দীপন ইত্যাদি থেকে আলাদা কোনো শর্ত ছাড়াই ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে, এই ঋণগুলো স্বল্পমেয়াদী এবং অল্প পরিমাণে হয়ে থাকে। এসব ঋণ সাধারণত ১ বছরের মাঝে পরিশোধ করতে হয়।
বিনা জামানতে ঋণ দেয়া ব্যাংকগুলোর তালিকা
আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান আছে, যারা জামানত ছাড়া ঋণ প্রদান করে থাকে। এছাড়াও, কিছু বিশেষায়িত ব্যাংক আছে যারা জামানত ছাড়াই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ঋণ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে যেসব ব্যাংক জামানত ছাড়াই ঋণ দেয়, তাদের একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করা হয়েছে।
- কর্মসংস্থান ব্যাংক
- আমার বাড়ি আমার খামার
- জনতা ব্যাংক
- ব্র্যাক ব্যাংক
- আশা এনজিও
- উদ্দীপন
- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
- বাংলাদেশ ব্যুরো
- গ্রামীণ ব্যাংক
- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি
উপরের তালিকায় উল্লেখ করা ব্যাংকগুলো থেকে বিনা জামানতে ঋণ নিতে পারবেন। তবে, তাদের দেয়া নিয়ম অনুযায়ী স্বল্প পরিমাণ টাকা ঋণ নিতে হবে। এসব ব্যাংক বা মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে চাইলে তাদের অফিসে বা নিকটস্থ যেকোনো শাখায় যেতে হবে।
এরপর, তাদের থেকে লোনের আবেদন করার ফরম পূরণ করে নিতে হবে। অতঃপর, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ ফরমটি জমা দিতে হবে।
বিনা জামানতে ঋণ নিতে কী কী লাগে
বিনা জামানতে ঋণের আবেদন করতে চাইলে বেশ কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। যা একটু আগেও আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ, ঋণের আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। অতঃপর, আবেদন ফরমের সাথে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। এগুলো হচ্ছে –
- ভোটার আইডি কার্ড/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স এ র ফটোকপি
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ০২ কপি রঙিন ছোব
- নমিনির ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
- নমিনির সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ০২ কপি ছবি
- লোন নেয়ার ফরম পূরণ করতে হবে
- আবেদন ফরমে প্রয়োজনীয় জায়গায় স্বাক্ষর দিতে হবে
- অল্প পরিমাণ টাকা সঞ্চয় করতে হবে
জামানত ছাড়া ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে থাকবে। আপনি শুধুমাত্র একটি ফরম পূরণ করে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টগুলো জমা দেয়ার মাধ্যমে এক সপ্তাহ থেকে দুই সপ্তাহের মাঝেই ঋণ পেয়ে যাবেন। এসব ব্যাংক থেকে কীভাবে ঋণের আবেদন করতে হয় তা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন এখানে।
জামানত ছাড়া ঋণ নেয়ার উপায়
আমাদের দেশে বিনা জামানতে ঋণ দেয়ার দিক থেকে এগিয়ে আছে বিভিন্ন মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করে ঋণের আবেদন ফরম পূরণ করতে হয়। এরপর, বেশ কিছু ডকুমেন্ট জমা দেয়ার মাধ্যমে অনেক সহজেই ঋণ নেয়া যায়।
গ্রামীণ ব্যাংক, আশা ব্যাংক, উদ্দীপন সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান আছে যারা বিনা জামানতে ঋণ দিয়ে থাকে। তবে, তাদের একটি শর্ত থাকে। এটি হচ্ছে, প্রতিবার ঋণের কিস্তির টাকার সাথে কিছু পরিমাণ টাকা সঞ্চয় হিসেবে জমা করতে হবে।
এছাড়া, এসব প্রতিষ্ঠান থেকে অল্প পরিমাণ টাকা ১ বছরের জন্য ঋণ দেয়া হয়। তাই, যারা জামানত ছাড়া ঋণ নিতে ইচ্ছুক, তারা এসব মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
জামানত ছাড়া ঋণ নিতে করণীয় কী
জামানত ছাড়া ঋণ নিতে চাইলে যে প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে চান, সেখানে যোগাযোগ করতে হবে। বিভিন্ন মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানের মাঠকর্মীরা কিস্তির টাকা তুলতে যায়। তাদের সাথে এসব লোন বিষয়ে কথা বললে তারা একটি আবেদন ফরম দিবে।
আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে নিজের সকল তথ্য দিয়ে। অতঃপর, প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। সাধারণত ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং ছবি লেগে থাকে। এসব তথ্য দিয়ে আবেদন করতে হবে। অতঃপর, আবেদন অনুমোদন হলে আপনি ঋণের টাকা নিতে পারবেন।
জামানত ছাড়া ঋণ নেয়ার জন্য মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিসে যেতে পারে। এরপর, তাদের সাথে কথা বলে স্বল্পমেয়াদী ঋণের আবেদন ফরম নিতে হবে এবং নিজের সকল তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। এছাড়া, প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
এই পদ্ধতি অনুসরণ করার মাধ্যমে ঋণ নিতে পারবেন। ঋণ নেয়ার পর প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কিস্তি আকারে দিতে হবে। এভাবে, মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান থেকে বিনা জামানতে ঋণ নেয়ার পর তা পরিশোধ করতে পারবেন। এছাড়া, আপনি চাইলে ব্যাংক থেকেও জামানত ছাড়া ঋণ নিতে পারবেন।
ব্যাংক থেকে জামানত ছাড়া ঋণ
ব্যাংক থেকে জামানত ছাড়া ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ব্যাংক এবং কৃষি ব্যাংক এগিয়ে আছে। অল্প পরিমাণ টাকা ঋণ প্রয়োজন হলে আমাদের দেশের যেকোনো ব্যাংকে ঋণের আবেদন করার মাধ্যমে ঋণ নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে, জামানতের প্রয়োজন হবেনা।
সাধারণত, বেশি দিন মেয়াদের এবং বেশি পরিমাণ টাকা ঋণের ক্ষেত্রে জামানত নেয়া হয়। তবে, আপনি যদি অল্প পরিমাণ টাকা ঋণ নেন এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল অল্প হয়, সেসব ঋণে জামানত লাগেনা। জামানত ছাড়াই ব্যাংকের এসব খাত থেকে ঋণ নিতে পারবেন।
সারকথা
আজকের এই পোস্টে বিনা জামানতে ঋণ দেয়া কোন ব্যাংক থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের বিনা জামানতে দেয়া ঋণ ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছি। যারা জামানত ছাড়া ঋণ নিতে ইচ্ছুক, তারা এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে কোন ব্যাংকগুলো জামানত ছাড়াই লোন দিচ্ছে, তা জানতে পারবেন।